Nov 25, 2008

আমাদের মুক্তি আন্দোলনের বীল সিপাহশালার গণ (Our brave Sector Commanders)

১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ ভেঙ্গে পাকিস্তান ও ভারত সৃষ্টির পর থেকেই মুক্তিযুদ্ধের কারনগুলো সৃষ্টি হওয়া শুরু হয়েছে।এর মধ্যে প্রধানতম কারন ছিলো ভাষা, সমাজ, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ভৌগলিক অবস্থানের সকল বিরুদ্ধতাকে উপেক্ষা করে পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা। প্রকৃতই পূর্ব এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে একমাত্র ধর্ম ব্যাতিত অন্য কোন মিল ছিলোনা।
১৯৭১সালে ২৫ শে মার্চ থেকে ১৬ ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিলো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপ্তি। রক্তক্ষয়ী এই স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ প্রসঙ্গে দু'এক কথা বলে কিছুই জানানো যায় না। এটি ছিলো সবলের বিরুদ্ধে দুর্বলের যুদ্ধ।
১৯৭১ সালে সংগঠিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালনায় অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য সমগ্র ভূখন্ডকে বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্র বা সেক্টরে ভাগ করা হয়।

১ নং সেক্টর :
চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ফেনী নদী পর্যন্ত বিস্তৃত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন তৎকালিন মেজর জিয়াউর রহমান (এপ্রিল-জুন) এবং মেজর মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (জুন-ডিসেম্বর)

২ নং সেক্টর :
তৎকালীন নোয়াখালী জেলা কুমিল্লা জেলার আখাউড়া-ভৈরব রেললাইন পর্যন্ত এবং ফরিদপুর ও ঢাকার অংশবিশেষ নিয়ে বিস্তৃত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর খালেদ মোশাররফ (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) মেজর এ.টি.এম. হায়দার (সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর)

৩ নং সেক্টর :
তৎকালীন সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমা, আখাউড়া-ভৈরব রেললাইন থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে কুমিল্লা ও ঢাকা জেলার অংশবিশেষ নিয়ে বিস্তৃত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর কে.এম. শফিউল্লাহ (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) মেজর এ.এন.এম.নুরুজ্জামান (সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর)

৪ নং সেক্টর :
তৎকলীন সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চল এবং খোয়াই-শায়েস্তাগঞ্জ রেললাইন বাদে উত্তর দিকে সিলেট-ডাউকি সড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর সি.আর. দত্ত

৫ নং সেক্টর :সিলেট-ডাউকি সড়ক থেকে সিলেট জেলার সমগ্র উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল বিস্তৃত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর মীর শওকত আলী

৬ নং সেক্টর :
তৎকলীন সমগ্র রংপুর জেলা এবং দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও মহকুমা পর্যন্ত বিস্তৃত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন এম.কে. বাশার

৭ নং সেক্টর :
তৎকালীন দিনাজপুর জেলার দক্ষিনাঞ্চল, বগুড়া, রাজশাহী এবং পাবনা জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর কাজী নুরুজ্জামান

৮ নং সেক্টর :
সমগ্র কুষ্টিয়া ও যশোর জেলা, ফরিদপুরের অধিকাংশ এলাকা এবং দৌলতপুর-সাতক্ষীরা সড়কের উত্তরাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত এই এলাকার সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর আবু ওসমান (এপ্রিল-আগষ্ট) মেজর এম.এ. মনজুর (আগষ্ট-ডিসেম্বর)

৯ নং সেক্টর :
দৌলতপুর-সাতক্ষীরা সড়ক থেকে খুলনার দক্ষিনাঞ্চল এবং সমগ্র বরিশাল এবং পটুয়াখালী জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন মেজর এম.এ. জলিল (এপ্রিল-ডিসেম্বরের প্রথমার্ধ) মেজর জয়নুল আবেদিন (ডিসেম্বরের অবশিষ্ট দিন)

১০ নং সেক্টর :
কোনো আঞ্চলিক সীমানা নেই। নৌবাহিনীর কমান্ডো দ্বারা গঠিত। শত্রুপক্ষের নৌযান ধ্বংসের জন্য বিভিন্ন সেক্টরে পাঠানো হত।এই সেক্ট্ররের নাম ইতিহাসে কোথাও সংগৃহীত নাই।

১১ নং সেক্টর :
তৎকালীন কিশোরগঞ্জ মহকুমা বাদে সমগ্র ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা এবং নগরবাড়ি-আরিচা থকে ফুলছড়ি-বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত যমুনা নদী ও তীর অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত এই অঞ্চলের কমান্ডার ছিলেন মেজর আবু তাহের (আগস্ট-নভেম্বর), ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এম. হামিদুল্লাহ (নভেম্বর-ডিসেম্বর)
এছাড়াও আছে..

টাংগাইল সেক্টর :
সমগ্র টাংগাইল জেলা ছাড়াও ময়মনসিংহ ও ঢাকা জেলার অংশ নিয়ে বিস্তৃত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন আব্দুল কাদের সিদ্দিকী


আকাশপথ :
বাংলাদেশের সমগ্র আকাশসীমা বিস্তৃত এই সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন এক.কে. খন্দকার