Sep 30, 2011

Collected : শেয়ার বিনিয়োগ: নিট সম্পদ, বোনাস ও শেয়ার প্রতি আয়

একজন পুরোপুরি শেয়ার ব্যবসায়ী। সে নিট সম্পদের ভিত্তিতে শেয়ার কিনে ঠকেছে। একদিন আমাকে জিজ্ঞেস করলো, আচ্ছা শেয়ারের দর তো নিট সম্পদকে প্রতিফলিত করা উচিত। কিন্তু কোন কোন শেয়ারের দর নিট সম্পদ থেকে কম কেন? আমি বললাম, তোমার লেখাপড়ায় ঘাটতি আছে। নিট সম্পদ তখনই একজন বিনিয়োগকারীর জন্য মূখ্য বিষয় হতে পারে যদি কোম্পানিটি অবসায়নে গিয়ে তোমাকে বা বিনিয়োগকারীকে আনুপাতিক হারে সম্পদগুলো বিক্রি করে ভাগ করে দেয়

নিট সম্পদের মধ্যে এমনও সম্পদ আছে যেগুলো অলস বসে আছে। কোম্পানির আয় কোন রকম অবদান রাখছে না। তোমার জন্য মূখ্য উপাদান হলো শেয়ার প্রতি আয়

এ আয় যদি বাড়তে থাকে তাহলে তুমি আশা করতে পার কোম্পানিগুলো নগদ লভ্যাংশ বা স্টক বোনাস দেবে

আর সম্পদ থাকলো অনেক, কিন্তু ওইগুলো ঠিকমতো ব্যবসায়িক ফল লাভে ব্যবহৃত হচ্ছে না। তাহলে ওই কোম্পানির ভালো নিট সম্পদ দিয়ে বিনিয়োগকারীর কি লাভ? আবার এটাও মনে রেখ, কোম্পানির আয়ের থেকে অর্থ সরিয়ে নিয়ে কোম্পানি যে রিজার্ভ বা সম্পদ গড়ে তুললো ওটার দ্বারা যদি এমন সম্পদ কিনে যে সম্পদ থেকে কোন লাভই আসছে না তাহলে নিট সম্পদের অঙ্ক বড় হতে পারে, তবে শেয়ার প্রতি আয় কমে যাবে।

সেই জন্য তোমাকে বলছি, নিট সম্পদের গুনগত মান দেখ, যদি নিট সম্পদ পূর্ণ ক্ষমতার ব্যবহার হচেছ এবং শেয়ারপ্রতি আয়ও ভালো তাহলে তুমি এ শেয়ারকে কিছুটা উচ্চ মূল্যে কিনতে পারে

আরেকটা কথা জানা ভালো, এই যে,
কেউ কেউ P/E(X) তে শেয়ার ক্রয় করে এটার কারন কি?
- কারন হল কোম্পানির ওপর আস্থা এবং কোম্পানির আয় ও সম্পদ ব্যবহারের দক্ষতা। তারা জানে আজকে ইপিএস কম হলে কি হবে, ২বছর পর ইপিএস অনেক বেড়ে যাবে। তাই আজকে তারা অন্য শেয়ারের তুলনায় অপেক্ষাকৃত উচু P/E(X) তে শেয়ার কিনছে।

আর একটি প্রশ্ন হল : নিট সম্পদের দর যদি সম্পদের রিভ্যালুয়েশনের মাধ্যমে বেড়ে যায় তাহলে কি হবে?
- এক্ষেত্রে দ্বিগুণ সতর্ক হতে হবে।
ওতে কোম্পানি সম্পর্কে একটা চকচকে ধারণা দেয়া হবে। কিন্তু তুমি তো নিট সম্পদের কোন ভাগিদার হবে না, যদি না কোম্পানি তোমাকে জমায়িত অর্থ থেকে বোনাস বা শেয়ার না দেয় অথবা কোম্পানিটি অবসায়নে গিয়ে বাজার মূল্যে জমি-মেশিন ইত্যাদি বিক্রি করে তোমাকে ভাগ করে না দেয়।

অনেক কোম্পানির আয় হিসাবে দেখবে পেইডআপ ক্যাপিটালের কয়েকগুণ রিজার্ভে জমা আছে। এখানে কথা থাকে ওই রিজার্ভে কিভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এমনও তো হতে পারে রিজার্ভকে কাজে লাগাতে গিয়ে এমন কিছু ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে যে ক্ষতির বিপরীত চলতি আয় থেকে সঞ্চিত রাখতে হবে। এমতাবস্থায় কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় কমে যাবে।

অল্প সম্পদের জন্য দায়ও আছে। সেটা হলো ডিপ্রিসিয়েশন চার্জ। ডিপ্রিসিয়েশন চার্জ কিন্তু আয়কে কমিয়ে দেয়। একদিকে সম্পদ কোন কাজেই আসছে না, অন্যদিকে ডিপ্রিসিয়েশন চার্জের মাধ্যমে চলতি আয়কে কমিয়ে দিচ্ছে, সেই অবস্থায় অলস জমি আর অলস মেশিন মিলে নিট সম্পদের মূল্য বেশি হলে তোমার কি লাভ হবে?

বি:দ্র: কোম্পানির বড় সম্পদ মানব সম্পদ, যা নিট সম্পদের হিসাবে আসে না।

Sep 28, 2011

Collectde : ভুল থেকে শেখা (পর্ব-১)

শেয়ার বাজার হচ্ছে সম্ভবতঃ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা যেখানে লাভের চেয়ে লস করা অনেক সহজ। শেয়ার বাজারে সবাই লাভ করতে আসে, লাভ করে গুটি কয়েকজন, বাকিরা পুঁজি হারিয়ে শেয়ার বাজার থেকেও ধীরে ধীরে হারিয়ে যান। শেয়ার ব্যবসা আমার পেশা নয়, শখের বশে করি। কিন্তু শেয়ার ব্যবসাই যাদের রুটি রুজি তারা যদি লাভ না করে বরং পুঁজি হারিয়ে বসেন তাহলে এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু হতে পারে না। একটা কথা প্রচলিত আছে " শেয়ারবাজারে লস না দিয়ে কেউ লাভ করতে শেখে না। এই কথাটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। শেয়ারবাজারে ঢোকার আগে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে শিখে পড়ে আসেন এ রকম লোক হাজারে দু এক জন পাওয়া যেতে পারে। বাকিরা সবাই আসেন আলাদিনের চেরাগ দেখে যেখানে ঘষা দিলেই দৈত্য এসে অট্টহাসি দিয়ে বলবে " হুকুম করুন মালিক" , আর তখনই আপনি বলবেন ২০ লাখ টাকা দিয়ে শেয়ার কিনেছি, এটাকে ৩ মাসে ৪০ লাখ বানিয়ে দে। দৈত্য মাথা চুলকে বলবে " মালিক, আপনার শেয়ার তো সবগুলাই পচা, এগুলা থেকে তো ৪০ লাখ বানানো সম্ভব না, তবে আপনি বললে ২০ লাখকে ১০ লাখ বানিয়ে দিতে পারি। " দৈত্য যে সব কিছু পারে না, এটাতো আপনার জানা ছিল না। কি আর করা? আলাদিনের চেরাগ ঘষার চিন্তা বাদ দিয়ে আপনি চিন্তা করতে বসলেন। কি করা যায়? বাবার পেনশনের ৫ লাখ টাকা , বউয়ের গহনা বন্ধক রেখে ২.৫ লাখ , নিজের জমানো ২.৫ লাখ, মোট ১০ লাখ আর লোন ১০ লাখ সর্বমোট ২০ লাখ টাকা দিয়ে শুরু করেছি। ১ বছর হয়ে গেছে লোনের সুদ দেড় লাখে এসে ঠেকেছে। আর ২০ লাখ টাকার শেয়ারের দাম এখন ১২ লাখে এসে ঠেকেছে। লোনের সুদ সমন্বয় করলে সাড়ে ১০ লাখ টাকা থাকে, কোন একদিন সব শেয়ারের দাম ৫০ হাজার টাকা কমে গেলেই ফোর্স সেল। খালি হাতে ফিরতে হবে। এখন আর ভিক্ষা চাই না, কুত্তা সামলাও অবস্থা। যদি কোনভাবে পুঁজি তোলা যায় তবে জীবনে আর শেয়ারবাজারের নাম তো নেবই না, চৌদ্দ গুষ্ঠির কাউকে এই ব্যবসায় আসতে দেবো না। আমাদের বেশীরভাগই এমন চিন্তা করি, নিজের ভুলগুলো ধরতে পারিনা। কিছু ভুল আছে যেগুলো শোধরানো যাবে না, যেগুলো শোধরানো যাবে আসুন সে ভুল গুলো খুঁজে বের করি, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আবার নতুনভাবে শুরু করি। আমি নিশ্চিত আপনার ভুলগুলো শোধরাতে পারলে আপনি লসের ধারা থেকে বের হয়ে লাভের মুখ দেখতে থাকবেন এবং শেয়ারবাজারে একজন ভালো বিনিয়োগকারী হিসেবে টিকে থাকবেন। জটিল বিষয় পরিহার করে খুব সহজ ভাষায় লিখতে চেষ্টা করছি।

কি রেডি তো? আসুন ভুলগুলো খুঁজে বের করি এবং শুধরে ফেলি।


একঃ আপনার মানি ম্যানেজমেন্টের দক্ষতা কেমন?
-------------------------------------------------------------

বাজারের আপ ডাউন থেকে লাভ বের করার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল মানি ম্যানেজমেন্ট। কয়েকটি প্রশ্ন করুন নিজেকেঃ

(১) আপনি কি আপনার সব টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছেন?
(২) কোন একটি শেয়ার কেনার পর দাম কমে গেলো । এটাকে ব্যাক আপ দেবার ক্ষমতা কি আপনার আছে?
(৩) কোন একটি শেয়ার হঠাৎ বাড়তে শুরু করলো , এটা থেকে ভালো লাভের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ওই শেয়ার ধরার ক্ষমতা কি আপনার আছে না সব টাকা খাটানো?
(৪) কোন শেয়ারের দাম একদিনে অনেক বেশি পড়ে গেলো, অনেক বেশি ভলিউমে ট্রেড হল, আপনি কি ওখানে এভারেজ করে আপনার গড় কমিয়ে এনেছেন?

আপনার উত্তর মিলিয়ে নিনঃ

১ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যাঁ এবং ২ও ৩ নং প্রশ্নের উত্তর না হলে আপনি দশের মধ্যে শূন্য পেয়েছেন। আসুন এবার পাশ করার কৌশল শিখে ফেলি।

যে কোন ব্যবসায় ঝুঁকি আছে। যেখানে ঝুঁকি বেশি সেখানে লাভের সম্ভাবনাও বেশি। ঝুঁকি ততটুকু নেওয়া উচিত যেটা মোকাবেলা করা যাবে। যেটা সাধ্যের বাইরে চলে যাবে সেই ঝুঁকি নেওয়া উচিত নয়। তাই ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য কিছু টাকা ক্যাশ রাখতে হয়। উঠতি বাজারে অন্ততঃ ২৫% টাকা হাতে রাখা ভালো যাতে আপনার পোর্টফোলিও প্রয়োজনে এডজাস্ট করতে পারেন। পড়তি বাজারে ৭৫% টাকা ক্যাশ করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। আমরা ৯৯% লোক এই ভুলটা করা থাকি। আমাদের ধারণা যত বেশি বিনিয়োগ তত বেশি লাভ, আমি বলবো যত বেশি বিনিয়োগ তত বেশি ঝুঁকি, তত বেশি লোকসানের সম্ভাবনা। উঠতি বাজারে আপনি দেখবেন ভালো শেয়ারের চেয়ে খারাপ শেয়ার লাফালাফি বেশি করছে, একইভাবে পড়তি বাজারে খারাপ শেয়ারগুলোই দ্রুত পড়ছে। তাই মানি ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে এই একটি বেসিক নিয়ম যদি আপনি মেনে চলেন আপনার ঝুঁকির মাত্রা কমে আসবে।

একটা উদাহরন দেওয়া যাকঃ আপনার বিনিয়োগ ১০ লাখ টাকা। কোন একটি আপট্রেন্ডে আপনার ২ লাখ টাকা লাভ হল। বাজার ডাউন ট্রেন্ড শুরু করলো। দাম আরো বাড়ার আশায় আপনি শেয়ার ধরে রাখলেন। বাজার পড়তে পড়তে আপনার ২ লাখ টাকা লাভ ও চলে গেলো আপনার পুঁজি থেকে আরো এক লাখ টাকা কমে গেলো। বাজার যখন আপট্রেন্ড শেষ করে ডাউন ট্রেন্ড এর ইঙ্গিত দিবে তখন আপনি আপনার শেয়ার বিক্রি করে দিলে পতনের শেষে আবার যখন বাজার ঘুরে দাঁড়াবে তখন আপনার বিনিয়োগ সক্ষমতা থাকতো ১২ লাখ টাকা, পড়তি বাজারে আপনি ৩ লক্ষ টাকা সুরক্ষা করতে পারলেন যা পরের আপট্রেন্ডে আপনাকে আরো লাভ দিতে পারে।

আমিতো আপট্রেন্ড ডাউন ট্রেন্ড এর মাথামুন্ডু কিছু ধরতে পারছি নাঃ
---------------------------------------------------------------------------------

আপনি ধরতে পারছেন না এটা ঠিক নয়, আপনার অবচেতন মন লসের আশঙ্কায় আপনাকে ভুলিয়ে রেখেছে। বাজার পতনের সময় ও বাজার আর পড়বে না মর্মে আপনি কিছু যুক্তি তুলে আপনার মতে অনড় আছেন। বাজার উঠতে উঠতে যখন প্রায় ম্যাচিউর হয়ে গেছে তখনো আপনার অবচেতন মন আপনাকে বলছে দাম আরো বাড়বে, কেন বাড়বে তার কোন যুক্তি কি আপনার কাছে আছে? নেই, শুধু আছে লোভের তাড়না। আপনি দেখবেন পতনের সময় যত ভালো নিউজই আসুক না কেন তা পতন ঠেকাতে পারছে না, আবার উঠতি বাজারে ছোট্ট একটি সংবাদ বাজারকে আরো উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। এর কারণ কি আপনার জানা আছে? ওই সংবাদ কি বাজারকে উঠাচ্ছে নামাচ্ছে নাকি এই সংবাদকে বাজার উঠানামায় কেউ ব্যবহার করছে? আপনি কি খেয়াল করেছেন সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ গত বছর কোন লভ্যাংশ না দিলেও ডিক্লারেশন এর দিন ঐ শেয়ারের দাম কেন আপার সার্কিট স্পর্শ করেছিল? আবার এ বছরের শুরুতে এনবিএল সবার আগে ৯৫% বোনাস শেয়ার ঘোষণা করার পরও কেন ওই শেয়ারের দাম কমেছিলো? এই দুইটি প্রশ্নের উত্তর হল প্রথম শেয়ারের ঘোষণার সময় বাজার পাগলা ঘোড়ার মত দৌড়াচ্ছিল আর দ্বিতীয়টির সময় বাজার দ্রুত নামছিলো। একটু খেয়াল করলে আপনি ধরতে পারবেন। খুব সহজ ভাষায় যদি বলি বাজারের সাধারণ নিম্নসীমা হল ৫৩০০ আর উর্ধ্বসীমা ৬৭০০। নিম্নসীমার কাছাকাছি দেখবেন কোন একদিন হঠাৎ খুব বেশি ইনডেক্স বেড়েছে, একইসাথে টার্নওভার ও বেড়েছে আর ঐ দিনের ক্লোজ আগের দিনের উর্ধ্বসীমাকে ছাড়িয়ে গেছে। টিএ তে একে আমরা বলি রেজিস্ট্যান্স ব্রেক। একইভাবে বাজার যখন উর্ধ্বসীমার কাছাকাছি পৌঁছাবে তখন কোন একদিন দেখা যাবে বাজার হঠাৎ বেশ পড়ে গেছে যা আগের দিনের ক্লোজ এর চেয়েও বেশি এবং আগের দিনের চেয়ে টার্ণওভার বেশ কমে গেছে। আর বেশি টার্ণওভার এর সাথে ইনডেক্স এর বেশি পতন (ভলিউম ব্রেক আউট) হলে তা নিশ্চিত পতনের শুরু ধরা যায়।

বড় বড় পন্ডিতরা তো বলছেন শেয়ারবাজারে এখনি বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়, আর আপনি কি প্যাঁচাল পাড়তেছেন?
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------

বড় বড় পন্ডিতরা তাদের অবস্থান থেকে নিজ নিজ বক্তব্য দেন। আইসিবির চেয়ারম্যান কয়েকদিন আগে বললেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের এখনই উপযুক্ত সময়। কিন্তু আইসিবি কি এখন পুরো টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছে? প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সূচক ৬০০০-৬৫০০ এর মধ্যে থাকা উচিত। এই অতিকথনের বাজারে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। সূচক কি উনার কথা ফলো করেছে? এই বক্তব্যের সারমর্ম হল বাজার যেন ৬০০০ এর নিচে না যায় সেজন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন, আবার সূচক যখন ৬৫০০ এর উপরে যাবে তখন সতর্ক হবেন। আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন প্রধানমন্ত্রীর এই লিমিটের নিচে যেহেতু সূচক নেমেছে , একসময় ৬৫০০ এর উপরেও যাবে। আর এখন যেমন দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা সূচক পড়া থামাতে পারছেন না, তখনো পারবেন না।


সব পন্ডিতে বলে শেয়ার হোল্ড করেন, আর আপনি মহাপন্ডিত বলছেন ছেড়ে দিতে, আপনি কি কোনো গ্যাম্বলার এর এজেন্ট?
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

আমরা যারা ছোট বিনিয়োগকারী আমাদের জন্য ১০% এর বেশি লস কিন্তু অনেক লস। বড় বিনিয়োগকারীদের জন্য তা কোন লসই না। ধরুন মালেক স্পিন এর শেয়ার আপনি কিনবেন ভেবেছেন। এখন এটার দাম ৬০ টাকার কাছা কাছি, আপনার বাই টার্গেট ৫০ টাকা, আপনি দেখলেন ৫২ টাকার নিচে আর নামছে না, ৫২-৫৪ রেঞ্জে ট্রেড হচ্ছে। আপনি ঐ রেঞ্জে বিনিয়োগ করতে পারেন। কিন্তু একজন বড় বিনিয়োগকারী যিনি ৫ কোটি টাকার মালেক স্পিন কেনার জন্য বসে আছেন তিনি তো ৬৫ লেভেল থেকে কেনা শুরু করেছেন, এটা কমতে কমতে ৫৫ টাকায় যাওয়া পর্যন্ত তিনি কিনতে থাকবেন আবার ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা উঠা পর্যন্ত কিনতে থাকবেন। এতে তার এভারেজ প্রাইস হবে ৬০ টাকার কাছাকাছি। ৬৫ তে কেনার পর দাম ৫৫ তে গেলে আপনার লস হচ্ছে ১০ টাকা, আবার ৬৫ তে উঠার পর আপনার লস কভার হচ্ছে, এখন যে কয় টাকা উঠবে সে কয় টাকা আপনার লাভ। আপনি ৫৫ তে কিনে ৬৫ তে বিক্রি করে দিলেইতো এই শেয়ার তার দাম বাড়তে শুরু করার মুহুর্তেই আপনার পোর্টফোলিওতে ২০% লাভ ঢুকে যাচ্ছে। কি বোঝা গেলো? এখন বলুন আমি কি গ্যাম্বলার এর এজেন্ট না আপনাদের স্যাভিয়র?

দাম কমলে এভারেজ করবো না তো ঐ লস আপনি পুষিয়ে দেবেন?
--------------------------------------------------------------------------------

আপনি এভারেজ করে আরো যে লস করবেন এভারেজ না করে আগে বিক্রি করে দিলে কম লসে বের হয়ে আসতে পারতেন। ধরুন সন্ধানী ইন্স্যুরেন্স এর ১ লট শেয়ার রেকর্ড ডে এর পরে আপনি ২৭০ টাকায় কিনেছেন। এটার দাম ২ দিন বাড়ে, ৩ দিন কমে। ২৬০ টাকায় চলে আসলো। ২৫৮-২৬২ লেভেলে বেশ কয়েকদিন বেচা কেনা হচ্ছে। হটাৎ একদিন দেখলেন ২৬০ থেকে এটা ২৪০ টাকায় চলে এসেছে, ঐ দিন টার্ণওভার গত ৩/৪ দিনের এভারেজ টার্ণওভারের চেয়ে অনেক বেশি। এই শেয়ারের উপর যে খাস গজব নাযিল হবে তার আলামত দেখার পরও আপনি এভারেজ করবেন? তাহলে করতে থাকেন আর লস খেতে থাকেন। আমিতো ভাই ঐ শেয়ারের উপর যেদিন গজব নাযিল হয়েছে সেদিনই বেচে দিয়েছি, আমি ১০% লস দিয়ে বের হয়েছি। আপনার খবর কি? এই প্রশ্নের উত্তর কি হতে পারে তা আমি আগেই জানি। আ-না মারিজুন খাতিমুন। মানে আমি মারা গেছি।

শুধু একটা কথা মনে রাখবেন কোন দিন আগের দিনের চেয়ে অনেক বেশি ভলিউমে ট্রেড আর দাম আগের দিনের সর্বোচ্চ দামের চেয়েও কমে গেলে বুঝবেন ওই শেয়ারের উপর খাস গজব নাযিল হয়েছে । ( ডাউন সাইড ব্রেক আউট)

দাম পড়লে ব্যাক আপ দেওয়ার কথা বলেন, আবার বেশি পড়ে গেলে এভারেজ না করার কথা বলেন, আপনার কথা তো আমার মাথায় ঢুকতেছে না, আপনি কি টেকনিক্যাল এনালিস্ট নাকি জিঞ্জিরার নকল তালা বানানোর টেকনিশিয়ান?
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

যা খুশি ভাবতে পারেন। কোন শেয়ারের ডাউন সাইড ব্রেক আউট হয়ে গেলে আপনার উচিত হবে দ্রুত ঐ শেয়ার খালি করে ফেলা। পেছনে ফিরে তাকানোর দরকার নেই। প্রতি ২০ টার মধ্যে হয়তো ১ টা আবার ঘুরে আসতে পারে, বাকি ১৯ টাই একই আচরণ করবে। ব্যাক আপ দেওয়ার কথা বলছি, এটাও এভারেজ করার মতই , কথা সত্য। তবে পার্থক্য আছে। কিছু শেয়ার ক্যাশ রাখলে হঠাৎ কোন মওকা পাওয়া গেলে তা যেমন ধরা যায়, তেমনি আপনার যেই শেয়ারের পারফরম্যান্স তুলনামূলক ভালো সেটাতে বাকি টাকা ইনভেস্ট করে দুর্বল পারফরম করা শেয়ার বেচে দিয়ে আবার ক্যাশ করে রাখতে পারেন। কনফার্ম আপট্রেন্ডে সব শেয়ারের দাম একদিনে নাও বাড়তে পারে। যদি কোন শেয়ারের দাম আগের কেনা দাম থেকে কিছুটা কমে পাওয়া যায় তাহলে ওই শেয়ারে কিছুটা খাটানো যায়। এটাকে ঠিক এভারেজ বলা যায় না।


মানি ম্যানেজমেন্ট এর এটা একেবারে বেসিক। আমি শুধু বেসিক নিয়েই আলোচনা করবো। এতটুকু করতে পারলেই আপনি আগের চেয়ে অনেক দক্ষ বিনিয়োগকারী হয়ে উঠবেন। আমার কথা আপনার মনে ধরলো না? তাইলে বাদ দেন। আপনার মত করে ট্রেড করেন আর সামনের বছর মূলধণের অর্ধেক হারিয়ে তারপর আমার লেখাটা খুঁজে বের করেন।

(চলবে...)
পরবর্তী পর্ব- পজিশন সাইজিং।

Writer : Taj U Ahmed