ভলিউম স্প্রেড এনালাইসিস (পর্ব-৩) : মৌলিক
বিষয়াবলীঃ
===============================
( লেখক কর্তৃক স্বত্ব সংরক্ষিত)
কিভাবে বুঝবো একটা মার্কেট
স্ট্রং না উইক?
--------------------------------------
শেয়ার মার্কেটে প্রতিদিন শুরু থেকে শেষ
পর্যন্ত আমরা অনেক বাই
বা সেল অর্ডার দেখি।
কখনো দেখা যায়, কোন একটি শেয়ার দীর্ঘদিন ধরে
একটা ন্যারো রেঞ্জে ট্রেড
হচ্ছে হঠাৎ দেখা গেলো
অনেক বড় ভলিউমে ট্রেড
হচ্ছে এবং দাম অনেক
বেড়ে গেছে। মাঝে মধ্যে
এ ধরনের শেয়ারের দাম
আগের দিনের চেয়ে একটা
বড় গ্যাপ দিয়ে শুরু
হয় অথবা দিনের শুরুতে
আগের দিনের ক্লোজের কাছাকাছি
শুরু হয়ে সারাদিন ধরে
বাড়তে থাকে এবং দিনশেষে
আপার সার্কিট স্পর্শ করে, আবার
দেখা যায় দিনের শুরুতে
আপার সার্কিটের কাছাকাছি থেকে ট্রেড শুরু
হয়ে দিনের শেষে লোয়ার
সার্কিটে ট্রেড হয়। কেন
এমন হয়?
আমরা জানি, শেয়ারবাজারে অনেক
ধরণের বিনিয়োগকারী আছেন, বড় বিনিয়োগকারী
বা গ্যাম্বলাররা তাদের বেশি ক্ষমতার
( মূলধন) কারণে বাজারকে প্রভাবিত
করতে পারেন। তাদের একাউন্টে
অনেক বড় ভলিউমের শেয়ার
থাকে। যদি না থাকে
তবে তারা বর্তমান প্রাইস
থেকে উপরে আরেকটি প্রাইস
লেভেল সেট করেন যাতে
তারা বেশীরভাগ শেয়ার কিনতে পারেন।
বাজার যখন উঠতে থাকে
তখন দেখা গেলো দিনের
শুরুতেই আপনার আগের কেনা
কোন শেয়ারের দাম হঠাৎ ১০%
বেড়ে গেলো। আপনি ১০%
লাভ পেয়ে খুশি হয়ে
বিক্রি করে দিলেন। পরের
২ দিনে দেখা গেলো
এর দাম আরো বাড়ছে,
তখন শুধুই আফসোস। বুল
মার্কেটে আপনার শেয়ারের ভালো
দাম পাওয়ার কারণ কি?
এর কারণ কি এটা
যে বড় বিনিয়োগকারী বা
গ্যাম্বলার আপনাকে পছন্দ করে,
তাই তারা তাদের লাভের
কিছু অংশ আপনার জন্য
ছেড়ে দিয়েছে? আসল কারণ হল
বড় বিনিয়োগকারীদের বুলিশ মুভে লাভ
বের করার জন্য বেশি
পরিমাণ শেয়ার হাতে নেই,
তাই তারা বেশি পরিমাণ
শেয়ার কেনার জন্য আরেকটা
প্রাইস লেভেল সেট করেছেন।
এভাবে হঠাৎ দাম বাড়িয়ে
দেওয়া কে আমরা বলি
মার্ক আপ ( Mark UP)। অন্যদিকে
হঠাৎ দাম কমিয়ে ফেলাকে
আমরা বলি মার্ক ডাউন
(Mark Down)।
মাঝে মধ্যে দিনের শুরুতেই
কোন শেয়ারের দাম আপার সার্কিট
স্পর্শ করে ফেলে। এই
গ্যাপটা তৈরী করা হয়
খুব দ্রুত যাতে এটার
একটা Emotional Effect তৈরী হয়। এটা
করা হয় সাধারণতঃ একটা
দুর্বল মার্কেটে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার
কিনে নেওয়ার জন্য। যারা
শর্ট টাইমে বিনিয়োগ করেন
তারা লাভ হবার কারণে
দ্রুত সেল করে দেন,
প্যানিক ট্রেডার রা ফাঁদে পা
দেয় এবং তাদের শেয়ার
সেল করে দেয়। কিন্তু
এরপর দেখা যায় ঐ
শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে।
সাধারণতঃ বুল মুভে এ
ধরণের গ্যাপ তৈরী করা
হয়, যখন চারিদিকে শুধুই
ভালো খবর, দাম বাড়ার
নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে,
আর সবাই ছুটছেন ঐ
শেয়ার ধরার জন্য। এখন
আমাদের বুঝতে হবে কোন
গ্যাপ টা তৈরী করা
হয়েছে দাম বাড়ানোর জন্য
বা নতুন প্রাইস লেভেল
সেট করার জন্য আর
কোন গ্যাপটা তৈরী করা হয়েছে
প্রফেশনাল ট্রেডারদের শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের
গছিয়ে দেওয়ার জন্য। আসুন
ব্যাপারটা ভালো করে বুঝার
চেষ্টা করি।
কোন শেয়ারের দাম বাড়ার জন্যও
যথেষ্ঠ পরিমাণ শেয়ার প্রফেশনাল
ট্রেডারদের বুকে থাকা প্রয়োজন।
এজন্য পেছনে ফিরে তাকাতে
হবে। যদি দেখা যায়
এর আগে অনেকদিন মার্কেট
সাইডওয়ে মুভ করেছে এবং
ভালো পরিমাণ শেয়ার ট্রেড
হয়েছে তাহলে বুঝতে হবে
প্রফেশনাল ট্রেডারদের হাতে বেশ ভালো
পরিমাণ শেয়ার আছে। এখন
গ্যাপ দিয়ে দাম বাড়ানোর
অর্থ হল প্রফেশনাল ট্রেডাররা
তাদের শেয়ার বিক্রি করার
জন্য মার্ক আপ করছে।
আগে কিছুদিন সাইডওয়ে মুভ করার পর
যদি বড় ভলিউমের সাথে
দামের বড় গ্যাপ দেখা
যায় তাহলে বুঝতে হবে
ঐ শেয়ারের দাম বাড়বে ।
অন্যদিকে দামের গ্যাপ আছে
কিন্তু ভলিউম সাপোর্ট না
থাকলে বুঝতে হবে এটা
False Move. যদি কোন ডাউন ওয়ার্ড
ট্রেডিং চ্যানেলে বড় ভলিউমের সাথে
গ্যাপ দিয়ে শেয়ারের দাম
বাড়ে তবে সেটাকে আমরা
ট্র্যাপ গ্যাপ বলতে পারি।
বাজার বুলিশ মুভে যাচ্ছে
কিন্তু এর আগে সাইডওয়ে
মুভমেন্ট না থাকলে বুঝতে
হবে প্রফেশনাল ট্রেডারদের হাতে খুব বেশি
শেয়ার নেই। সেক্ষেত্রে তারা
শেয়ার কালেকশনের জন্য আপার সার্কিটের
কাছাকাছি একটা প্রাইস লিমিট
সেট করবে এবং বেশি
পরিমাণ শেয়ার কিনে নিতে
চাইবে, এক্ষেত্রে দামের স্প্রেড খুব
ছোট হবে এবং দামে
একটা বড় গ্যাপ থাকবে।
যেমন আগের দিনের ক্লোজ
প্রাইস ৫০ টাকা হলে
তারা দিনের শুরুতেই ৫৫
টাকার কাছাকাছি প্রাইস সেট করবে
এবং যত শেয়ার আসবে
সবগুলোই কিনে নেবে।
চার্টে দেখুন, বামদিকে একটা
ন্যারো সাইডওয়ে মুভমেন্ট থাকার পরে গ্যাপ
দিয়ে বেশি ভলিউমে ট্রেড
হয়েছে। এই আপ যে
প্রফেশনাল ট্রেডারদের কাছে থাকা শেয়ার
বিক্রি করার জন্য তা
পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। কারণ
এর আগে বাজার বেশ
কিছুদিন সাইডওয়ে মুভ করেছে এবং
প্রফেশনাল ট্রেডাররা শেয়ার কেনার জন্য
যথেষ্ঠ সময় পেয়েছে। বড়
ভলিউমে ট্রেড প্রাইস স্প্রেডকে
সাপোর্ট করছে। এটাকে অনেকে
বুলিশ ব্রেক আউট ও
(Bullish Breakout) বলে থাকেন। এ ধরণের
চার্ট প্যাটার্ণ দেখলে আপনি বাই
এর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ডানদিকে
আরেকটি বড় গ্যাপে শেয়ারের
দাম বেড়েছে, কিন্তু ভলিউম খুব
বেশি বাড়েনি, অর্থাৎ প্রফেশনাল ট্রেডারদের
এই শেয়ারের প্রতি এই দামে
কেনার আগ্রহ নেই। আবার
বাজার ডাউনওয়ার্ড ট্রেডিং চ্যানেল এ আছে , কাজেই
এই মুভ আসল নয়।
সারাংশঃ কোন শেয়ারের বুলিশ
ব্রেক আউট হলে অর্থাৎ
বড় ভলিউমের সাথে দামের স্প্রেড
বেশি হলে দেখতে হবে
এর আগে ঐ শেয়ারের
কোন সাইডওয়ে মুভমেন্ট আছে কিনা? যদি
থাকে তবে এই ব্রেক
আউট আসল। বড় ভলিউমের
সাথে বুলিশ ব্রেক আউট
হলে কিন্তু এর আগে
সাইডওয়ে মুভমেন্ট না থাকলে বুঝতে
হবে প্রফেশনাল ট্রেডাররা শেয়ার কেনার জন্য
নতুন প্রাইস লেভেল সেট
করতে যাচ্ছে, এর পর কিছুদিন
বাজার সাইডওয়ে মুভ করতে থাকবে
, সাইডওয়ে মুভমেন্টের পরে বুলিশ ব্রেক
আউট হলে তা আসল
হবে।
(চলবে............)
পরবর্তী পর্ব (পর্ব-৪)- বাই ও সেল কিভাবে সনাক্ত করবো।
Writer : Taj U Ahmed
আসুন শেয়ার বাজার সম্পর্কে জানি , জানি ভাল শেয়ার চেনার উপায় এবং নিয়মাবলী ।
Oct 15, 2011
Collected - ভুল থেকে শেখা (পর্ব-৪)
ভলিউম স্প্রেড এনালাইসিসঃ পর্ব -১ ( ভূমিকা) =========================
একঃ
----
কখনো কখনো পত্রিকায় এমন কিছু খবর আসে যা দেখে আমাদের চোখ আটকে যায়। একটা ভালো পত্রিকার বিশেষত্ব হচ্ছে এটা খুব সামান্য ঘটনাকে রংচং মেখে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করে যাতে পাঠক মনোযোগ দিয়ে তা পড়েন। তেমন কয়েকটি খবরের শিরোনাম দেখুনঃ
১। টমেটো বিক্রি হচ্ছে শায়েস্তা খাঁর আমলের দামে, মণ ২ টাকা!!!
২। বেগুনের কী গুণ, ৫ দিনে দাম বেড়েছে ৫ গুণ !!!
বর্তমান দূর্মূল্যের বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে এটাইতো স্বাভাবিক (???) কিন্তু অস্বাভাবিক হয় তখন যখন দাম যৌক্তিক পর্যায়ের চেয়ে কম বা বেশি হয়ে যায়, তখনই তা উপরের শিরোনামের মত খবর হয়ে পত্রিকায় আসে। কেন এমন হয়? এমন হবার মূল কারণ হচ্ছে চাহিদা ও সরবরাহের অসামঞ্জস্যতা (Imbalance between Demand and Supply)। যখন চাহিদার চেয়ে সরবরাহ বেড়ে যায় তখন পণ্যের দাম তার যৌক্তিক মূল্যের নিচে চলে যায় আবার যখন চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কমে যায় তখন দাম বেড়ে যায়। যেমন ধরুন, বৈশাখ মাসে কাঁচা আম বিক্রি হচ্ছে কেজি ২০ টাকা, হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে অনেক আম ঝরে গেলো। বাজারে সরবরাহ বেড়ে গেলো ৫ গুণ, কিন্তু এত কাঁচা আম কিনবে কে? তখন সরবরাহ বেশি হবার কারণে আমের কেজি হয়ে যায় ৪/৫ টাকা। আবার রমজান মাস আসলেই বেগুনের দাম বেড়ে যায় ৪/৫ গুণ, কারণ তখন সবাই বেগুনী খাওয়ার জন্য বেগুন কিনতে চান।
চাহিদা ও সরবরাহের এই অসামঞ্জস্যতা কোন পণ্যের দামের উপর প্রভাব ফেলে। শেয়ারবাজারেও চাহিদা ও সরবরাহের এই অসামঞ্জস্যতার উপর ভিত্তি করে একটা শেয়ারের দাম উঠানামা করে। এখন প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক, শেয়ার তো আর বেগু্ন , টমেটোর মত নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য নয়, এখানে চাহিদা সরবরাহে অসামঞ্জস্যতা আসবে কেন? উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাকঃ
গত বছর ফার্মা এইড ৫০০% বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছিলো, এবছর ঘোষণা করলো ২১% ক্যাশ। আপনাদের হয়তো মনে আছে, গত বছর লভ্যাংশ ঘোষণার পর ৬০০০ টাকার শেয়ারের দাম ১৮০০০ টাকায় উঠে যাবার পর এর লেনদেন স্থগিত করে দেওয়া হয়। এবছর ক্যাশ লভ্যাংশ ঘোষণার পর ৩০০০ টাকার শেয়ারের দাম নেমে আসে প্রায় ২০০০ টাকায়। প্রথমবারে প্রায় দ্বিগুণ দাম বৃদ্ধি এবং দ্বিতীয়বারে এক তৃতীয়াংশ দাম হারানোর কারণ হচ্ছে প্রথমবার আকর্ষণীয় লভ্যাংশ ঘোষণার পর এর ব্যাপক চাহিদা তৈরী হয়েছিল, কিন্তু সরবরাহ কমে গিয়েছিল, দ্বিতীয়বার একেবারে সাধারণ লভ্যাংশ ঘোষণার পর এর কোন চাহিদা ছিল না, আবার আরো দাম কমার আশঙ্কায় সবাই বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল ফলে সরবরাহ বেড়ে গিয়েছিল।
চাহিদা ও সরবরাহের অসামঞ্জস্যতা দুই কারণে হতে পারেঃ
১। মূল্য সংবেদনশীল কোন তথ্য যেমন বোনাস বা রাইট ঘোষণা, লভ্যাংশ ঘোষণা, ইপিএস ঘোষণা- এসব কারণে শেয়ারের চাহিদা বেড়ে বা কমে গেলে দামের উপর এর প্রভাব পড়ে।
২। কোন শেয়ারের উপর শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্ট কোন পক্ষের কার্যক্রমের ( Activities of Professionals ) কারণে। যেমন কোন বড় বিনিয়োগকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি কোন একটি শেয়ারের বেশীরভাগ শেয়ার বাজার থেকে কিনে নেয় তাহলে সরবরাহের ঘাটতির কারণে এর দাম বেড়ে যাবে, আবার যদি তারা একই শেয়ার বাজারে সরবরাহ দিতে শুরু করে তাহলে ঐ শেয়ারের দাম পড়ে যাবে।
দুইঃ
---
চাহিদা ও সরবরাহের অসামঞ্জস্যতার কারণে কোন শেয়ারের ভবিষ্যত দামের পূর্বানুমান করার জন্য আমরা যে বিশ্লেষণ করি তাই হচ্ছে ভলিউম স্প্রেড এনালাইসিস। ভলিউম স্প্রেড এনালাইসিস দুইটি বিষয়ের উপর কাজ করেঃ ভলিউম স্প্রেড ও প্রাইস স্প্রেড। ভলিউম স্প্রেড এনালাইসিস এর ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, ভলিউম এর তথ্য সঠিক এনালাইসিস এ কেবল অর্ধেক অর্থ বহন করে, বাকি অর্ধেক আসে প্রাইস স্প্রেড থেকে। ভলিউম কোন শেয়ারের উপর কার্যক্রমের পরিমাণ (Amount of activity) নির্দেশ করে আর প্রাইস স্প্রেড ঐ ভলিউমের উপর দামের উঠানামা (Price movement) বুঝায়। ভলিউম স্প্রেড এনালাইসিস কাজ করে কারণ ও ফলাফলের উপর (Cause and Effect)। অর্থাৎ এটা দামের উঠানামার কারণ ( Cause of Price Movement) অনুসন্ধান করে এবং এই কারণের উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে দামের উঠানামা কি হবে তা অনুমান করে। ফলাফল হচ্ছে বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে কোন শেয়ারের দামের উত্থান বা পতন (Bulish or bearish move)।
ভলিউম স্প্রেড এনালাইসিস এর আগে একটা বিষয় জেনে রাখা ভালো, সেটা হচ্ছে অনেকেই ভলিউম স্প্রেড এনালাইসিস কে গুরুত্ব দেন না, টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর এর উপর নির্ভর করেন। আবার যারা হার্ডকোর ভলিউম স্প্রেড এনালিস্ট তারা টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর কে গুরুত্বহীন মনে করেন। আমি মনে করি, দুটাই যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি কোনটাই আদর্শ নয়। তাই আমি টেকনিক্যাল ইন্ডিকেটর ব্যবহারের পাশাপাশি ভলিউম স্প্রেড এনালাইসিস কেও সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখি।
ভলিউম স্প্রেড এনালাইসিস সম্পর্কে ২/৪ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করা খুবই অসম্ভব ব্যাপার। তাই আমি পুরো বিষয়টিকে অন্ততঃ ৮/১০ পর্বে বিভক্ত করে আলোচনা করবো। পরবর্তী পর্বে থাকবে বাজার সম্পর্কিত কিছু মৌলিক বিষয়। তাহলে শুরু করা যাকঃ
ভলিউম স্প্রেড এনালাইসিসঃ পর্ব -২ ( বাজার সম্পর্কিত মৌলিক বিষয়াবলী)
========================================
ভলিউম স্প্রেড এনালাইসিস এ বিস্তারিত যাবার আগে কিছু মৌলিক বিষয় ও টার্ম নিয়ে আলোচনা করবো। পরবর্তী পর্বগুলোতে ঐ সব টার্ম ব্যবহার করা হবে। টার্মগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়লে পরবর্তী বিষয়গুলো বুঝতে আপনার সুবিধা হবে।
একঃ শেয়ার বাজার সম্পর্কে ধারণাঃ
------------------------------
শেয়ারবাজারে প্রায়শই এমন সব ঘটনা ঘটে যার জন্য আমরা মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকি না। কখনো দেখা যায় মাত্র ১/২ মাসে কোন শেয়ারের দাম ডবল হয়ে গেছে, আবার কোন শেয়ারের দাম ওই একই সময়ে এক চতুর্থাংশ হয়ে গেছে। বিষয়টা অনেকের কাছে বিস্ময়কর। শেয়ারটির দাম গত এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থায় এসেছে। এখন কেনার পর দেখা গেলো ওই দাম থেকেও প্রায় আরো ৫০% দাম হারিয়ে গেছে। শেয়ারের মুভমেন্ট কখনো খবর বা গুজবের দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং আমাদের ধারণার বিপরীতে আচরণ করে। বাজারের এই রহস্যময় আচরণের কারণে এখানে অনেকেই লাখপতি থেকে কোটি পতি বনে যান আবার অনেকে কোটি পতি থেকে লাখপতি হয়ে যান। বাজার যত জটিল আচরণ করুক না কেন এর কার্যকারণ জানা থাকলে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারলে শেয়ারবাজারে টিকে থাকার পাশাপাশি লাভ ঘরে তুলে আনা সহজ হবে। বিশ্বের প্রায় সব শেয়ারবাজারই একই আচরণ করে, কখনো পাগলা ঘোড়ার মত দৌড়াচ্ছে, আবার কখনো খাদে পড়ে যাচ্ছে কখনো এমন হেলে দুলে যাচ্ছে যে মনে হয় এই জীবনে আর শেয়ারবাজার উঠতে দেখবো না। কারণ একটাই আমরা সবাই মানুষ, পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকি না কেন আমাদের আবেগ, লোভ, তাড়না , ভয় - এই মৌলিক প্রবৃত্তিগুলো একই রকম। সেজন্যই সামান্য খবরে যেমন বাজার চাঙ্গা হয় আবার ধ্বসেও যেতে পারে। বাজারের এই বিভিন্নধর্মী আচরণের জন্য আমরা অনে সময় বড় লাভের মুখ যেমন দেখি আবার ক্ষতির সম্মুখীন ও হই।
তাহলে কি এই বাজার জুয়া খেলার বা বাজী ধরার মত?
না। যদিও অনেকেই শেয়ারবাজারকে জুয়াড়ীদের বাজার বলে থাকেন, আসলে ব্যাপারটা মোটেই তা নয়। তবে হ্যাঁ, শেয়ারবাজারেও জুয়াড়ী আছে, বড় বিনিয়োগকারী আছে, ছোট বিনিয়োগকারী আছে। সকল ধরণের পণ্যের বেচাকেনার জন্য পৃথক পাইকারী ও খুচরা বাজার থাকলেও এই শেয়ারবাজারই ব্যতিক্রম যেখানে পাইকারী ও খুচরা বিক্রয়- দুটাই একসাথে হয়। তাই হঠাৎ কোন শেয়ারের দাম সকালে কমছে তো বিকালে বিক্রেতা পাওয়া পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ কি? কারণ হচ্ছে বড় কোন ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ঐ শেয়ার কেনা বা বেচা শুরু করেছেন। যখনই বেশি পরিমাণে কিনছেন তখনই সরবরাহে ঘাটতি পড়ছে আর দাম বেড়ে যাচ্ছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে কোন শেয়ারের দামের উঠানামা নির্ভর করে মুলতঃ ঐ শেয়ারের চাহিদা ও সরবরাহের উপর। আর এই চাহিদা ও সরবরাহের আধিক্য বা ঘাটতি বোঝা যায় বাজারে তার ভলিউম এর পরিমাণ দেখে।
দুইঃ শেয়ারবাজারে অংশগ্রহণকারীবৃন্দঃ
----------------------------------
শেয়ারবাজারে যারা অংশগ্রহণ করেন তাদের মধ্যে রয়েছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী, বড় বিনিয়োগকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, গ্যাম্বলার, মার্কেট মেকার ( প্রফেশনাল ট্রেডারস) । এদের সম্মিলিত অংশগ্রহণে বাজারে প্রতিদিন বেচা কেনা হয়, কেউ লস খেয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন আর কেউ অভিজ্ঞতা দিয়ে লাভ করেন। এটা ঠিক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পক্ষে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বড় বিনিয়োগকারীগণ তাদের বড় পুঁজির কারণে বাজারে বাজারকে প্রভাবিত করতে পারেন, গ্যাম্বলাররা কোন শেয়ার ধীরে ধীরে কিনে বা বিক্রি করে সেটার দাম প্রভাবিত করতে পারেন। মার্কেট মেকাররা বাজারের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে বাজার থেকে লাভ বের করেন। শেয়ারবাজারে এই বিভিন্নধর্মী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের কারণে এর কার্যক্রম বুঝা বেশ জটিল ব্যাপার বৈকি তবে অসম্ভব নয়। পরবর্তী পর্বগুলোতে আমি ধাপে ধাপে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবো যাতে আপনি ধীরে ধীরে একজন দক্ষ বিনিয়োগকারী হিসেবে টিকে থাকেন।
তিনঃ ভলিউম- সাফল্যের চাবিকাঠি
-------------------------------
ভলিউম হচ্ছে প্রফেশনাল ট্রেডারদের জন্য মূল নির্দেশক ( Key Indicator)। একটা শেয়ারের কার্যক্রম যতটা ভলিউম দেখে বুঝা যায়, অন্য ইন্ডিকেটর দিয়ে অত সহজে বুঝা যায় না। চাহিদা ও সরবরাহের মূলনীতি জানা থাকলে ভলিউম বোঝা খুব কঠিন কোন কাজ নয়। ভলিউম বিষয়টা ভালো করে রপ্ত করতে পারলে আপনি খবর বা গুজবের ভিত্তিতে ট্রেড করবেন না, ট্রেড করবেন Fact এর উপর। সাধারণভাবে আমরা বলতে পারিঃ কোন শেয়ারের দাম বাড়বে যদি বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতা বেশি থাকে আর দাম কমবে যদি বিক্রেতার চেয়ে ক্রতা কম থাকে। বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতা বেশি থাকার অর্থ হল চাহিদা, আর ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা বেশি থাকার অর্থ হল সরবরাহ। চাহিদা ও সরবরাহের মূলনীতি মাথায় রেখে আপনি যদি বুঝতে চান ভলিউম আপনাকে কি বলছে তাহলে নিজেকে প্রশ্ন করুন- এই ভলিউমের উপর দাম কি আচরণ করেছে? তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি ভলিউম বাড়লে বা কমলে দাম ও বাড়ে বা কমে। দৈনিক বা সাপ্তাহিক চার্টে ভলিউমের পার্থক্যকে আমরা বলি ভলিউম স্প্রেড আর দামের পার্থক্যকে আমরা বলি প্রাইস স্প্রেড।
ভলিউম দিয়ে একটা দিনের Trading Activity বুঝা যায়। যদি পর পর ৩০ দিনের ভলিউম আপনি একটি গ্রাফে উপস্থাপন করেন তাহলে খুব সহজে বুঝা যাবে আজকের ভলিউম গত একমাসের গড় ভলিউম থেকে বেশি না কম না সমান। ভলিউমের এই তথ্যের সাথে দামের পার্থক্য (Spread) তুলনা করে আপনি বুঝতে পারবেন বাজারে এর চাহিদা বা সরবরাহ পরিস্থিতি কেমন, বড় বিনিয়োগকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই শেয়ার সম্পর্কে কি ভাবছে বা তাদের অংশগ্রহণ আছে কিনা।
চারঃ বুল ভলিউম ও বিয়ার ভলিউমঃ
--------------------------------
বুল ভলিউম (Bull Volume) বলতে আমরা বুঝবো কোন শেয়ারের দাম উর্ধমুখী থাকলে তার এভারেজ ভলিউমের চেয়ে অতিরিক্ত ভলিউম (Increasing Volume on up moves) এবং শেয়ারের দাম নিম্নমুখী থাকলে হ্রাসকৃত ভলিউম (Decreasing Volume on down moves)। আর বিয়ার ভলিউম (Bear Volume) বলতে আমরা বুঝবো কোন শেয়ারের দাম উর্ধমুখী থাকলে তার এভারেজ ভলিউমের চেয়ে হ্রাসকৃত ভলিউম (Decreasing Volume on up moves) এবং শেয়ারের দাম নিম্নমুখী থাকলে অতিরিক্ত ভলিউম (Increasing Volume on down moves) ।
বুল ও বিয়ার ভলিউম সম্পর্কে এটা হল একটা সাধারণ পর্যবেক্ষণ। আপনাকে জানতে হবে ভলিউমের সাথে দামের উঠানামা ( Price spread) এবং দামের কার্যক্রম(Price action) । বাজার বুঝতে হলে কিংবা কোন শেয়ারের দাম সম্পর্কে পূর্বনুমান করতে হলে বাজারকে বা কোন শেয়ারকে সার্বিকভাবে দেখতে হবে, এক বা দুইটা ভলিউম বার (Volume Bar) দিয়ে এটা বোঝা সম্ভব নয়। একটা উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাক। একটা শেয়ারে বড় বিনিয়োগকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের শেয়ার বিক্রি (Distribution) করছে, তারা এমন কৌশল নেবে যাতে আপনি ধারণা করেন ঐ শেয়ারের দাম বাড়বে, তাদের বিক্রির শেষ পর্যায়ে আপনি হয়তো একটা আপ থ্রাস্ট বার (Upthurst Bar) বা কম ভলিউমের আপবার (Low Volume Upbar) দেখবেন। বড় বিনিয়োগকারী বা গ্যাম্বলার সব সময়ই চাইবে আপনি ফাঁদে পা দেন, তাই এসম্পর্কে ভালো ধারণা নিতে হবে। দাম বাড়তে থাকলেই কোন শেয়ারের দামের উর্ধগতি বহাল থাকবে এমন নাও হতে পারে। এই ট্রিকটা যদি আপনি ধরতে পারেন তাহলে কোন শেয়ারের দাম বাড়তে থাকলে আপনি আগে ভেবে নেবেন এই উর্ধগতি আসল না বানানো ( Real or fake)। যদি আসল হয় তবেই আপনি ঐ শেয়ারে বিনিয়োগ করবেন।
পাঁচঃ আপবার ও ডাউনবার ( Upbar and Downbar):
-------------------------------------------------
কোন শেয়ারের দামের উঠানামা চার্টে ক্যান্ডেল বা মোমবাতির মত দেখানো হয়। চার্টে আপনি দুই ধরণের ক্যান্ডেল দেখবেন সাদা অথবা সবুজ এবং কালো অথবা লাল। কোন শেয়ারের ওপেন প্রাইস থেকে ক্লোজ প্রাইস যদি বেশি হয় অর্থাৎ ওই শেয়ারের দাম বাড়ে তাহলে চার্টে আপনি সাদা অথবা সবুজ ক্যান্ডেল দেখবেন, আর ওপেন প্রাইস থেকে ক্লোজ প্রাইস যদি কম হয় অর্থাৎ ওই শেয়ারের দাম কমে তাহলে চার্টে আপনি কালো অথবা লাল ক্যান্ডেল দেখবেন। সাদা বা সবুজ ক্যান্ডেলকে আমরা আপবার এবং কালো বা লাল ক্যান্ডেলকে ডাউনবার বলি।
ছয়ঃ এক্যুমুলেশন ও ডিস্ট্রিবিউশন ( Accumulation and Distribution):
---------------------------------------------------------------
বড় বিনিয়োগকারী বা গ্যাম্বলার বা সিন্ডিকেট ট্রেডার এলোমেলোভাবে শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয় করেন না। তারা পরিকল্পনা করে সমন্বিতভাবে তা করে থাকেন। কোন শেয়ারের দাম না বাড়িয়ে সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে যত বেশি সম্ভব শেয়ার ক্রয় করাকে বলে এক্যুমুলেশন। অন্যদিকে দাম না কমিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে আগের কেনা শেয়ার বিক্রি করাকে ডিস্ট্রিবিউশন বলে।
সাতঃ স্ট্রং এন্ড উইক হোল্ডারস ( Strong and Weak Holders):
----------------------------------------------------------
স্ট্রং হোল্ডারস হচ্ছে তারা যারা কোন দুর্বল ট্রেডিং এ নিজেদের ফাঁদে ফেলেন না, যারা তাদের পোর্টফোলিও নিয়ে সন্তুষ্ট এবং বড় পুঁজির কারণে কোন ডাউনমুভে বাজার থেকে হারিয়ে যান না বা আপমুভে তাদের শেয়ার হঠাৎ বিক্রি করে ফেলেননা। তারা বাজারের গতিপ্রকৃতি খুব ভালো বুঝতে পারেন এবং বাজারে সঠিকভাবে আচরণ করেন। তারা সহজে এবং ঘন ঘন লস নিতে অভ্যস্ত, যদিও তাদের লসের পরিমাণ খুব কম এবং বিনিয়োগ সুরক্ষার জন্য ও অধিক লাভের জন্য মাঝে মধ্যে লস দিয়ে থাকেন।
উইক হোল্ডারস হচ্ছে তারা যারা বাজারে নতুন, কম পুঁজির অধিকারী, বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে যথেষ্ঠ ওয়াকিবহাল নন, বাজার পরিস্থিতির সাথে তাৎক্ষণিকভাবে খাপ খাইয়ে নিতে অভ্যস্ত নন এবং সহজে লস মেনে নিতে পারেন না, অধিক লস হবার পরেও কেবলমাত্র আবেগতাড়িত হয়ে সিদ্ধান্ত ( Emotional Decisions) নেন। এরা বাজারের ট্রেন্ড এর সাথে চলেন না, দাম কমলেও শেয়ার ধরে রাখেন, ফলে দাম যত কমতে থাকে আরো বেশি লস হবার কারণে বিক্রি করতে না পেরে আটকে থাকেন (Lock in) এবং প্রত্যাশা করেন বাজার একদিন ঘুরে আসবে এবং তাদের কেনা দাম ফিরে পাবেন।
আটঃ বুল ও বিয়ার মার্কেট কিভাবে সৃষ্ঠি হয়?
---------------------------------------
যখন উইক হোল্ডাররা স্ট্রং হোল্ডারদের কাছে তাদের শেয়ার হস্তান্তর করেন তখন বিয়ার মার্কেট থেকে বুল মার্কেট সৃষ্ঠি হয়, অন্যদিকে যখন স্ট্রং হোল্ডাররা উইক হোল্ডারদের কাছে তাদের শেয়ার বিক্রি করেন তখন বুল মার্কেট থেকে বিয়ার মার্কেট সৃষ্ঠি হয়। বুল ও বিয়ার মার্কেট সৃষ্ঠির মূল কারণ হল চাহিদা ও সরবরাহে অসামঞ্জস্যতা। কোন শেয়ারের দাম যখন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়, খুব কম স্প্রেডে অনেক বেশি ভলিউম লেনদেন হয় তখন প্রফেশনাল ট্রেডাররা তাদের শেয়ার বাজারে অফলোড করেন, এই পরিস্থিতিকে আমরা বলি Buying Climax, সবাই পাগলের মত ছুটছে শুধু কেনার জন্য, প্রতিদিন শেয়ারের দাম লাফিয়ে লফিয়ে বাড়ছে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশাবাদ তৈরী হয় যে, এই শেয়ারের দাম আরো বাড়বে, আরো বাড়বে। এই পরিস্থিতির শেষদিকে বুল মার্কেট বিয়ার মার্কেটে রূপান্তরিত হয়। অন্যদিকে, বাজার যখন বুল মার্কেট থেকে বিয়ার মার্কেটে প্রবেশ করে, তখন প্রতিদিন শেয়ারের দাম কমতে থাকে, খুব কম প্রাইস স্প্রেডে অনেক বড় ভলিউম ট্রেড হয় তখন প্রফেশনাল ট্রেডাররা বাজার থেকে শেয়ার কিনতে থাকেন। সাধারণ বিনিয়োগকারীগণ আতঙ্কিত হয়ে যে দামই পান সেই দামে সেল করে দেন। এ পরিস্থিতিকে আমরা বলি Selling Climax.
(চলবে......)
পরবর্তী পর্ব (পর্ব-৩)- কিভাবে বুঝবো একটা মার্কেট স্ট্রং না উইক?
Subscribe to:
Posts (Atom)